কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী মানুষ বিল গেটসও ফার্মের মুরগি খায়, আর আমাদের দেশের মানুষ খায় না। আমরা এত বড়লোক হয়ে গেছি, এত স্বাস্থ্যসচেতন- আমরা ফার্মের মুরগি খাই না।’ ফার্মের মুরগি ক্ষতিকর কি না তা পরীক্ষা করে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থার বিজ্ঞানীরা জানাবে বলেও জানান তিনি। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘মানুষের মধ্যে কী একটা শুরু হয়েছে, ফার্মের মুরগি খাওয়া যাবে না যে, ফার্মের মুরগির মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক আছে! ফার্মের মুরগির মধ্যে ট্যানারির বর্জ্য আছে, এটা শরীরের জন্য নিরাপদ নয়! আমি আপনাদের জিজ্ঞাসা করি, সাংবাদিক বন্ধুদেরও বলতে চাই, কত লাখ টন ট্যানারির বর্জ্য হয় সাভারে?’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘৬০ লাখ টন ভুট্টাই হয়, বিদেশ থেকে ১০ লাখ টন আনি। আমার তো মনে হয় এক-দেড় কোটি টন (প্রাণিখাদ্য) খাবার লাগে। কত লাগে সঠিক পরিসংখ্যান আমার জানা নেই। সেখানে ট্যানারির বর্জ্য দিয়ে কীভাবে মাছের খাবার, গরুর খাবার তৈরি হয়। এটা কী সম্ভব?’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি আমার মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞানীদের বলেছি, আমাদের বারি (বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট), ইরি (আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট), বিএআরসি (বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল) বারটানের (বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট) বিজ্ঞানীদের বলেছি, তোমরা দেখ। তারা অলরেডি শুরু করেছে। তারা সারাদেশ থেকে স্যাম্পল নিয়ে গবেষণা করবে। তারা দেখবে অ্যান্টিবায়োটিক যেটা থাকে সেটা শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কি না, ক্ষতিকর কি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ধরণা ক্ষতিকর অবশ্যই নয়। তখন আমরা এটা আপনাদের সামনে নিয়ে আসব।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমার ইচ্ছা হয় আমি এখন টেলিভিশনে গিয়ে বক্তব্য দিই, অ্যাডভারটাইজ দেই যে, ফার্মের মুরগি ঝুঁকিপূর্ণ নয়, আমাদের মাছ ঝুঁকিপূর্ণ নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বলা হয় দুধের মধ্যে নানা ধরনের প্রিজারভেটিভ দেয়া হয়, এটাও ঠিক নয়। আমি বিদেশ থেকে এটা পরীক্ষা করিয়ে এনেছি। পরীক্ষায় প্রমাণ হয়েছে এগুলো সঠিক নয়। কিছু দেশদ্রোহী এটা প্রচার করে, এটা মোটেই ঠিক নয়। দুই বছর আগে দুধ নিয়ে একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক… কাদের স্বার্থে, কীসের স্বার্থে…। যারা বিদেশ থেকে দুধ আমদানি করে… বিদেশ থেকে দুধ আমদানির শুল্ক বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে বিদেশ থেকে দুধ না আসে, আমাদের খামারিরা যাতে লাভবান হতে পারে। সেজন্য তারা চক্রান্ত করেছে যে, বাংলাদেশে দুধের মধ্যে ভেজাল আছে।’